বাংলা নিউজ :
শিরক মানে অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠা করা। মহাবিশ্বের একচ্ছত্র অধিপতি মহান আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করার নাম শিরক।
শিরক সবচেয়ে জঘন্য অপরাধ। আল্লাহর গুণাবলীতে অন্য কাউকে সমকক্ষ সাব্যস্ত করার চেয়ে বড় অপরাধ আর কিছু নেই।
শিরকের চেয়ে নিকৃষ্ট কোন জুলুম নেই। পবিত্র কোরআনে শিরককে একটি বড় জুলুম হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
বলা হয়েছে, 'আর সেই সময়ের কথা স্মরণ কর যখন লুকমান তার পুত্রকে উপদেশ দিয়েছিল, "হে বৎস, আল্লাহর সাথে শরীক করো না।" নিশ্চয়ই আল্লাহর সাথে শরীক করা বড় অন্যায়। (সূরা: লুকমান: আয়াত: 13)
ইমাম আবু আবদুল্লাহ মুহাম্মাদ ইবনে ইসমাইল বুখারী (রহঃ) তার 'সহীহ' গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন, আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেন, যখন নিম্নোক্ত আয়াতটি নাযিল হয়- 'যারা ঈমান আনে এবং তাদের ঈমানের সাথে কোন জুলুম মিশ্রিত করে না। .. (সূরা: আনাম, আয়াত: 82)
তখন বিষয়টি সাহাবায়ে কেরামের কাছে খুবই কঠিন মনে হলো। তারা বলতে লাগলো আমরা সবাই কোন না কোন জুলুম বা পাপ করি। আমাদের মধ্যে কে সম্পূর্ণরূপে নিপীড়নমুক্ত? রাসুল (সাঃ) একথা শুনে বললেন, ব্যাপারটা এমন নয় যেটা তুমি মনে কর। লুকমান তার ছেলেকে কি উপদেশ দিয়েছিল তা কি তুমি দেখছ না! তিনি বললেন, হে প্রিয় পুত্র, আল্লাহর সাথে শরীক করো না। মনে রাখবেন, শিরক হচ্ছে সবচেয়ে বড় জুলুম। (সূরা: লুকমান, আয়াত: 13)
মহানবী (সা.)-এর বাণী ও লুকমান হাকিম (রা.)-এর উপদেশের আলোকে একথা দিবালোকের মতো স্পষ্ট যে, আল্লাহর সাথে শরীক করার চেয়ে বড় অন্যায় বা অপরাধ এই পৃথিবীতে আর কিছু নেই। শিরক সবচেয়ে বড় গুনাহ। ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ।
সর্বশক্তিমান আল্লাহ মুশরিকদের ক্ষমা করেন না। পবিত্র কোরআনে উল্লেখ আছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন না যে তার সাথে শরীক করে। এ ছাড়া তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে শরীক করে, তার উপর কঠিন অপবাদ আরোপ হয়। (সূরা: নিসা, আয়াত: 48)
মহান আল্লাহ বলেন, 'এবং নিশ্চিতভাবে জেনে রাখ যে, যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে শরীক করে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেন। তার ঠিকানা জাহান্নাম। আর যারা (এমন) জুলুম করে তারা কোন সাহায্যকারী পাবে না। (সূরা: মায়েদা, আয়াত: 72)
তাই প্রত্যেক মুসলমানের উচিত যে কোনো মূল্যে শিরক মুক্ত হওয়ার চেষ্টা করা। যদি আপনি অতীতে শিরক করে থাকেন তবে তা থেকে অনুতপ্ত হোন এবং সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে আন্তরিক অনুতপ্ত হন। এবং ভবিষ্যতে কখনো এ ধরনের পাপে লিপ্ত না হওয়ার সংকল্প করা। মহান আল্লাহ সবাইকে এ ধরনের গুনাহ থেকে দূরে থাকার তাওফিক দান করুন। আমীন।
লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া গফুরিয়া মাখজানুল উলূম, টঙ্গী, গাজীপুর। খতিব, আউচপাড়া জামে মসজিদ, টঙ্গী, গাজীপুর
0 Comments